ক্ষমতার উপাদানগুলি কি কি । জাতীয় ক্ষমতার মূল উপাদান গুলি আলোচনা করো।

ক্ষমতার উপাদানগুলি কি কি ? 

অথবা

জাতীয় ক্ষমতার মূল উপাদান গুলি আলোচনা করো।


ভূমিকা→বিশ্ব রাজনীতিতে শক্তি বা ক্ষমতা একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ভূমিকা পালন করতে পারে একটি ছোটো রাষ্ট্র সেই ভূমিকা পালন করতে পারেনা। ভূমিকার এই উৎসই শক্তি। রাষ্টের আসল হাতিয়ার শক্তি। শক্তির  দ্বারাই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি দেশ নিজের স্থান করে নেয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সমাজ তত্ববিদ দের যে বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে তা হলো শক্তি। এক কথায় অন্যের ব্যাবহার কে নিয়ন্ত্রণ করার নামই হলো ক্ষমতা বা শক্তি ।শক্তি রাজনীতি বিশেষজ্ঞ EH কার ক্ষমতার কতগুলি উপাদান উল্ল্যেখ করেছেন। এগুলি হল নিম্নরূপ-

ভৌগলিক পরিবেশ ও আয়তন→ একটি দেশের সামরিক শক্তি ভৌগোলিক পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়। ভৌগলিক কারণে একটি দেশে জনগণের মানসিক ও শারীরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অনুকূল পরিবেশের জন্য ইংল্যান্ড ,আমেরিকা বিশ্বের সমস্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পেরেছে। আবার একটি দেশের ভৌগোলিক আয়তন বড় হলে সামরিক ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া যায়।

জনসংখ্যা→   একটি দেশের জনসংখ্যা কে বলে মানবসম্পদ। এই মানব সম্পদ জাতীয় ক্ষমতার অধিকারীর অন্যতম উপাদান বলে মনে করা হয়। জনসংখ্যা বেশি হলে দেশ শক্তিশালী হয় না। তাহলে ভারত শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হতো। কিন্তু কম জনসংখ্যা দেশ কিউবা কত শক্তিশালী।

ভূপ্রকৃতি→  ভূপ্রকৃতির উপর দেশের জলবায়ু,বৃষ্টিপাত প্রভৃতি নির্ভরশীল। এমনকি যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ভূ-প্রকৃতির প্রভাবিত করে। ভূপ্রকৃতির বিচারে একটি দেশে গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত হয়। দেশের ভূপ্রকৃতি সামরিক প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন। ভূ-প্রকৃতির অনুকূল পরিবেশের জন্য আজও অনেক দেশ সামরিক শক্তির দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছে।

জলবায়ু→   ক্ষমতা সঙ্গে জলবায়ু সম্পর্কযুক্ত। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের জনগণ বেশি পরিশ্রমী হয়। এই রূপ অঞ্চলের দেশে বৃহৎ শক্তিশালী দেশে পরিণত হতে পারে।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন→ জাতীয় শক্তির সামর্থ অর্থনৈতিক উন্নয়নে এর উপর নির্ভরশীল। অর্থনৈতিক উন্নয়ন একটি দেশের পরিকাঠামোকে বদলে দেয়। এতে মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পায়।

নেতৃত্ব→ কূটনৈতিকও সরকারকে পরিচালনার জন্য চায় যোগ্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব। যেমন- কিউবায়- ফিদেল কাস্ত্রো নেতৃত্ব,ভারতের-নেহেরুর নেতৃত্ব, চিনে- চৌ-এন-লাই এর নেতৃত্ব, রাশিয়ার- লেনিনের নেতৃত্ব।

সামরিক শক্তি→ একটি দেশের সামরিক শক্তির মানের উপর ক্ষমতা নির্ভরশীল। বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মর্যাদা→   আন্তর্জাতিক অবস্থানও একটি দেশের শক্তি-সামর্থের অন্যতম শর্ত। যেকোনো শক্তি জোটের সদস্য হয়ে একটি দেশ শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে। পাশাপাশি একটি দেশের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বৃদ্ধি পায় পররাষ্ট্র নীতির মাধ্যমে।



Post a Comment

Previous Post Next Post